Jun 28, 2025

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
৪২-তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সরকারের নিকট দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ২৮ জুন ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২-তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। বৈষম্য বিলোপ এবং সংস্কার ছিলো তাঁদের মূল দাবি। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ঐক্য ধরে রাখা জরুরি। কিন্তু ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বৈচিত্র্যের নামে বিভেদ-বিভাজনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। এই বিভাজন জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত এ বিভাজনে আমরা উদ্বিগ্ন। যে অসীম সাহস আর প্রাণের মায়া ত্যাগ করে আমাদের ছাত্র-জনতা ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে; অকাতরে বুলেটের সামনে দাঁড়িয়ে রক্ত দিয়েছে, জীবন উৎসর্গ করেছে, সেই রক্ত আর জীবন দানের ঋণ বিভাজনের গর্ভে বিলীন হতে পারে না। এই আত্মদানকে আমরা অসম্মানিত করতে পারি না। ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে শহিদদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। উপাচার্য বলেন, নতুন বাংলাদেশে রাষ্ট্র সংস্কার এবং কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানোই হওয়া উচিত আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার। ছাত্র-জনতার এই বহুল প্রত্যাশিত দাবি পূরণে প্রয়োজন সৎ, মেধাবী এবং পক্ষপাতমুক্ত নাগরিক, সমাজ ও রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলা। এটিই রাষ্ট্র সংস্কারের মূলমন্ত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে বেলা চারটায় অনুষ্ঠিত সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য তাঁর ভাষণে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে, ১৯৯০ সালের গণ আন্দোলনে এবং ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণ অভূ্যত্থানে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। উপাচার্যের পদকে ‘ক্ষমতা’ নয়, ‘দায়িত্ব’ হিসেবে মন্তব্য করে উপাচার্য বলেন, দলমত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁর দায়িত্ব। তিনি এই দায়িত্ব পালনে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। উচ্চমানের শিক্ষা, গবেষণা এবং পূর্ণ আবাসিক চরিত্র নিশ্চিত করার প্রয়াস গ্রহণ করার তথ্য তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসিক হলে কক্ষ পেয়েছে। গণরুম সংস্কৃতির বিলোপ হয়েছে। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতি অম্লান রাখার উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক অস্থায়ীভাবে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ স্থায়ীভাবে নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরে উপাচার্য তাঁর ভাষণে বলেন, শিক্ষক-শিক্ষাথীর্দের মেধা, জ্ঞান-অন্বেষণের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন সমাজকে বদলে দিতে পারে। সুশাসন, দেশপ্রেম, পরিশীলিত আচার-আচরণ, গভীর কল্পনাশক্তি অর্ধশত বছরের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। উপাচার্য এই লক্ষ্য পূরণের সারথি হিসেবে অংশীদার হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকের প্রতি আহ্বান জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ডিসিপ্লিন খোলার তথ্য তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেন্টার ফর এশিয়ান স্টাডিজ’ এবং ‘ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক স্টাডিজ অ্যান্ড থিওলজি’ এবং চারুকলা বিভাগে ‘ক্যালিগ্রাফি অ্যান্ড টাইপোগ্রাফি’ ও ‘ইসলামিক আর্ট অ্যান্ড আর্কিটেকচার’ নামে নতুন ২টি ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। জাকসু নির্বাচন আয়োজনের তথ্য তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, ৩২ বছর ধরে সিনেটে শিক্ষাথীর্দের প্রতিনিধি নেই। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। উপাচার্য মেয়াদ উত্তীর্ণ অন্যান্য পর্ষদগুলোরও নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান। উপাচার্য তাঁর ভাষণে ২০২৬ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন এবং রক্ত ও জীবন দানের মাধ্যমে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য দূর, সংস্কার সর্বোপরি ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গঠনে উপাচার্য সংলাপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, সংলাপই ন্যায়-নীতির সঠিক পথ দেখায়। তিনি বলেন, প্রাচীন গ্রিসে যখন নানা বিষয়ে মতানৈক্য দেখা দিতো, বিবদমান পক্ষগুলো আইন-আদালতের তুলনায় অধিক পরিমাণে নিজেরা সংলাপে বসতো। মত পার্থক্য দূর করে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংলাপ অধিক ফলপ্রসূ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৩৩৭ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকার সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৩২৩ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার মূল বাজেট উপস্থাপন করেন।
অধিবেশনে জাতীয় বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সরকারের নিকট দাবি জানানো হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংবিধি প্রণয়নের যথাযথ প্রক্রিয়া গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
অধিবেশনে মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশনে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, পিএইচডি
পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত)
- ৪২-তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত
- জাবি উপাচার্যের সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রতিনিধিদলের সৌজন্য সাক্ষাৎ
- Professor Dr Saleh Ahammad Khan and Professor Dr Khondaker Mohammod Shariful Huda have been appointed as the new chancellor-nominated syndicate members of Jahangirnagar University .
- ২টি ছাত্র হল ও ২টি ছাত্রী হলের নতুন নাম প্রস্তাব আহ্বান
- কলা ও মানবিকী অনুষদের বার্ষিক গবেষণা প্রকল্প সেমিনার অনুষ্ঠিত \ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান সংবর্ধিত
- আইবিএ-জেইউ এর বার্ষিক গবেষণা প্রকল্প সেমিনার অনুষ্ঠিত
- সমাজবিজ্ঞান অনুষদের বার্ষিক গবেষণা প্রকল্প সেমিনার অনুষ্ঠিত
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত
- জীববিজ্ঞান অনুষদে বার্ষিক গবেষণা প্রকল্প সেমিনার অনুষ্ঠিত
- রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আমাদের আলোকবর্তিকা ও পথপ্রদর্শক - উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান